ভারতীয় চাল এলেও দামে ‘হেরফের নেই’

দর বৃদ্ধিতে লাগাম টানতে ভারত থেকে আমদানি করা চাল একসপ্তাহ ধরে বাজারে থাকলেও তাতে দামে তেমন হেরফের হয়নি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

আমদানির উদ্যোগ নেওয়ার একমাস পার হতে চললেও চালেও দাম কমানোতে তার কোনো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তারা। তবে ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ, আলু ও শাক-সবজির দাম মোটামুটি সহনশীল পর্যায়ে রয়েছে।

শুক্রবার কারওয়ান বাজারে একাধিক খুচরা বিক্রেতা জানান, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন কোম্পানির ভারতীয় মিনিকেট ও আটাশ চাল বাজারে এসেছে। তবে দাম দেশীয় মিলের মতোই। সেকারণে ভারতীয় চালে ক্রেতার আগ্রহ কম।

কারওয়ান বাজার রেললাইন গলিতে কিশোরগঞ্জ রাইস এজেন্সির একজন বিক্রয়কর্মী বলেন, দেশীয় মিনিকেট প্রতি বস্তা তিন হাজার টাকা। আর ভারতীয় মিনিকেট প্রতি বস্তা ২৯০০ টাকা।

“দামে পার্থক্য খুবই কম। সেকারণে ভারতীয় চাল খুব একটা চলছে না।”
গত সপ্তাহের শুরুতে এক চালানে যে চাল এসেছিল তা এখনও রয়েছে বলে জানান এই বিক্রেতা।


রেললাইনের পাশের এই চালের দোকানগুলো প্রশস্ত রাস্তার পাশে হওয়ায় খুচরা ও পাইকারি দুই ধরনের বেচাকেনাই এখানে হচ্ছে। শুক্রবার বেশ কয়েকটি মিনি ট্রাকে চাল ওঠানামা দেখা গেলেও সেখানে ছিল না কোনো আমদানি করা চাল।

কারওয়ান বাজারে এদিন মিনিকেট ৬০ টাকা, নাজির ৬২ টাকা, বিআরআটাশ ৪৬ টাকা, পাইজাম ৪৫ টাকা, স্বর্ণা ৪০ টাকা, জিরা শাইল ৫২ টাকায় প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছিল।

আরেক বিক্রেতা নজরুল ইসলাম বলেন, “সত্যি কথা বলতে কি ভারতীয় মিনিকেট চালের ২৫ কেজির এক বস্তা চাল কেনা পড়ছে ১৪৩০ টাকা, দোকানে তুলতে গিয়ে খরচ পড়ে যাচ্ছে আরও ২০ টাকা।

“এই চাল ১৫০০ টাকায় না বিক্রি করলে খরচ পোষাচ্ছে না।”

চালের বাজারে কোনো সুখবর না থাকলেও শাক-সবজির বাজারে সময়ের সবচেয়ে সুলভ মূল্য বিরাজ করছে বলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের দাবি।

কারওয়ান বাজারে এদিন প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৬ টাকা থেকে ২৮ টাকায়। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকায়। প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হয়েছে ১৪ টাকা থেকে ১৫ টাকায়।

পেঁয়াজ বিক্রেতা খবির উদ্দিন বলেন, “এই মৌসুমে হঠাৎ করেই আলু-পেঁয়াজের দাম কমে গেল। এর চেয়ে বেশি কমে গেলে কৃষকের লস হবে।”


চীনা রসুন ১২০ টাকা, দেশি রসুন ১০০ টাকা, আদা ৭০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।
সারা বছরে প্রতি কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি হওয়া টমেটো এদিন প্রতি কেজি ২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। টমেটোর মতোই, শিম, বেগুন বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০ টাকায়।

বড় আকারের ফুল কপি, বাঁধা কপি বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ১৫ টাকায়। ব্রকলি প্রতিটি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শিমের বিচি পাওয়া যাচ্ছে প্রতি কেজি ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকায়।

দাম কমে যাওয়ার এই স্বীকৃতি পাওয়া গেল নিয়মিত হোটেল রেস্টুরেন্টের জন্য কেনাকাটা করতে আসা মিরাজুল ইসলামের কাছে।

“অনেকদিন পর কাচা বাজারে এসে মনের মতো দামে কেনাকাটা করলাম। সারা বর্ষাজুড়ে তরকারির বাজার আগুন ছিল। পেঁয়াজ, আলু, টমেটোর দাম অনেক কমেছে,” বলেন মিরাজুল।

এদিকে ফার্মের মুরগীর ডিমের চেয়ে প্রয় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে ফার্মের হাঁসের ডিম। যেখানে ফার্মের ডিম প্রতি ডজন ৮০ টাকা যেখানে হাঁসের ডিম প্রতিডজন ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

;